Pages

Monday, May 8, 2017

মোল্লার ইসলাম বনাম আল্লাহর ইসলাম


আজকাল হঠাৎ করেই আমাদের দেওবন্দী আলেমরা বাংলা চর্চা করতে আরম্ভ করেছেন। তারা এখন বাংলা একেডেমির অভিধান, কোলকাতার সংসদ অভিধান আর বাংলাপিডিয়া থেকে অর্থ উদ্ধৃত করে জনগণকে বুঝাতে চাচ্ছেন, মূৰ্তি আর ভাস্কর্য এক ও অভিন্ন বস্তু। অতএব ভাস্কর্যটি সরাতেই হবে। অথচ আলেম হিসেবে তারা বিষয়টিকে কোরানের আলোকে উপস্থাপন করলেই স্পষ্ট হয়ে যেত, আল্লাহর দৃষ্টিতে মূৰ্তি আর ভাস্কর্য এক ও অভিন্ন জিনিষ কিনা! 
    ১. সূরা নাহলের ৩৬ নম্বর আয়াতের প্রথমাংশে আল্লাহ তা’লা বলেছেন, “আর আল্লাহর ইবাদত করবার ও তাণ্ডতকে বৰ্জন করার নির্দেশ দেয়ার জন্য আমি প্রত্যেক জাতির মাঝে রসূল পাঠিয়েছি।'... অর্থাৎ সমস্ত নবী-রসূল আল্লাহর একত্ববাদ বা তাওহীদ শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তাদের কেউ কখনও শিরক করেন নি বা শিরকের শিক্ষা দেন নি। 
    ২. সূরা সাবার ১৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তালা হজরত সুলায়মান (আ.) প্রসঙ্গে বলেছেন, “তারা তার (অর্থাৎ সুলায়মানের) ইচ্ছানুযায়ী প্রাসাদ ও ভাস্কর্য এবং হাওযসদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং সুদৃঢ়ভাবে স্থাপিত ডেগ নির্মাণ করত। আমি বলেছিলাম, হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতার সাথে তোমরা কাজ করতে থাক।'... এখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, আল্লাহর পবিত্র নবী হজরত সুলায়মান (আ.) অন্যান্য জিনিষপত্রের পাশাপাশি ভাস্কর্য নির্মাণ করাতেন। আর একাজকে নিষেধ না করে আল্লাহ্ তা'লা বরং এ বিষয়ে কৃতজ্ঞতা প্ৰকাশ করতঃ কাজ অব্যহত রাখতে বলেছেন। অতএব ভাস্কৰ্যনিৰ্মাণ শিরক বা অংশিবাদিতার নামান্তর নয়। এমনটি হলে আল্লাহর পবিত্র নবী তা কক্ষনও করতে পারতেন না! উল্লেখ্য, এ আয়াতে ভাস্কর্যের জন্য আরবীতে ‘তামাসীল” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
    ৩. সূরা ইবরাহিমের ৩৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা’লা বলেছেন, “এবং স্মরণ কর, ইবরাহিম যখন বলেছিল, “হে আমার প্রতিপালক! এ নগরীকে নিরাপদ করো এবং আমাকে ও আমার পুত্রদেরকে প্রতিমাপুজা থেকে দূরে রেখো”। হজরত ইবরাহিম(আঃ) যখন মক্কা নগরীর ভিত পুণঃস্থাপন করেন তখন তিনি এ দােয়াটি করেছিলেন। এতে তিনি মূর্তিপূজার অপবিত্রতা থেকে নিজেকে এবং নিজ বংশধরদের মুক্ত রাখার জন্য আল্লাহর কাছে মিনতি জানিয়েছিলেন। এস্থলে মূর্তির জন্য আরবীতে ‘আসনাম' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। 
    পুরিস্কার বুঝা গেল, পবিত্র কোরআনের পরিভাষায় ভাস্কর্যের জন্য ‘তামসীল আর মূর্তির জন্য ‘আসনাম দুটি পৃথক পৃথক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অতএব এ দুটি ভিন্ন জিনিষ, ভিন্ন উদ্দেশ্যে এ দুটি নির্মিত হয়। ৪. সূরা ইউসুফের শেষে আল্লাহ তা’লা নবী-রসূলদের উল্লেখ করার পর ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, "তাদের বৃত্তান্তে বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে এক মহাশিক্ষা।'. তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য হল, অযথা ফতোয়াবাজি না করে

    খোদাভীরুতার সাথে কোরআন চৰ্চা করি, নবী-রসূলদের শিক্ষানুযায়ী শান্তিপূর্ণ জীবনাদর্শ গ্রহণ করি। আশা করি, দেওবন্দী আলেম-উলামা আগামীতে আমাদেরকে বাংলা অভিধান থেকে ধর্ম না শিখিয়ে পবিত্র কোরআন থেকে ইসলাম শিক্ষা দিবেন। 






www.islamshanti.wordpress.com

No comments:

Post a Comment