Pages

Wednesday, May 10, 2017

চাপাতি মোল্লাদের দৌরাত্ম!


গতকাল ৯ই মে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তভুক্ত (যাদেরকে ব্যঙ্গ করে কাদিয়ানী বলা হয়) জনৈক ইমামের ওপর আক্রমণ করার কারণ বর্ণনা করে আক্রমণকারী আব্দুল আহাদ মোহাম্মদুল্লাহর একটি সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়। সাক্ষাতকারে এই উগ্র ধর্মািন্ধ ব্যক্তি বলেছে, ধর্ম বিকৃত করার অপরাধে, কুরআন-সুন্নাহ-হাদীস বিকৃত করার শাস্তিস্বরূপ সে এই হত্যা প্রচেষ্টা চালিয়েছে। গ্রামে কর্মরত নিরীহ আহমদীয়া ইমাম ধর্ম বৃিকত করেছে নাকি রামদা। আর চাপাতি নিয়ে "ইসলাম রক্ষাকারীরা ধর্ম উদ্ধার করছে একথা যে কোন শান্তিপ্রিয় মুসলমান বেশ ভালই বোঝে! কিন্তু সেই আহমদীয়া ইমামও যদি কোন বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে ধর্ম অবমাননা করে থাকে বা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে ভিন্নমত পােষণ করে থাকে সেক্ষেত্রে মুসলমানদের করনীয় কি? ধর্ম বিকৃত করার বা ধর্ম অবমাননার আদৌ কােন জুগতিক শাস্তি নির্ধারিত আছে কি না তা না জেনেই আজকালকার “অতি ধাৰ্মিক’ আর ‘নব্য ধাৰ্মিকরা’ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকার মন্তব্য কলামে এই আক্রমণের সপক্ষে যেসব বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে- এসব মন্তব্য আমাদের সমাজের অবক্ষয় এবং এর ওয়াহাবী মগজধোলাইয়ের একটি করুণ চিত্র উপস্থাপন করছে। আল্লাহ তা’লা বলেছেন, 
“নিশ্চয় তিনি তোমাদের প্রতি এ মহাগ্রন্থে বিধান অবতীর্ণ করে দিয়েছেন, তোমরা যখন আল্লাহর আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যাত হবার এবং এগুলোর প্রতি কটাক্ষ করার কথা শুনবে তখন তোমরা তাদের সাথে আর বসবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত না হয়। তা না হলে তোমরা তাদেরই মত বলে পরিগণিত হবে। নিশ্চয় আল্লাহ কপট-মোনাফেকদের আর কাফেরদের জাহান্নামে একত্র করবেন।’ (সূরা নিসা: ১৪০) 
একে বলে উদারতা! এই হল ইসলামের পরমতসহিষ্ণুতা! আজ এসব ধর্ম ব্যবসায়ী 'চাপাতি মোল্লারা” তা ভুলে বসে আছে। পবিত্র কোরআনের এ শিক্ষা কোন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মুখাপেক্ষী নয়। ধর্ম বিষয়ে কটাক্ষকারীদের সাথে বা ধর্মবিকৃতকারীদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে। তারা সম্বিত ফিরে পেয়ে নিজেদের অবস্থার সংশোধন করলে তাদের সাথে সুসম্পর্ক বহাল করা যাবে। এরা ধর্ম অবমাননার বা বিকৃতির যে জঘন্য অপরাধ করেছে তার শাস্তি এরা পরকালে পাবে। ইহজগতে এ অপরাধের কোন জাগতিক শাস্তি নেই। 

অতএব দেখা গেল ইসলামের প্রকৃত শিক্ষার সাথে এ খুনিদের দূরতম সম্পর্ক নেই এবং এদের কর্মকাণ্ড কখনই ইসলাম সমর্থিত নয়। এসব রক্তপিপাসুকে প্রশ্রয় দিলে সোনার বাংলা পাকিস্তানে পরিণত হবে। এ রকম ধর্মান্ধদের হাত থেকে কোন সম্প্রদায়ই নিরাপদ থাকবে না। 




www.islamshanti.wordpress.com

Monday, May 8, 2017

মোল্লার ইসলাম বনাম আল্লাহর ইসলাম


আজকাল হঠাৎ করেই আমাদের দেওবন্দী আলেমরা বাংলা চর্চা করতে আরম্ভ করেছেন। তারা এখন বাংলা একেডেমির অভিধান, কোলকাতার সংসদ অভিধান আর বাংলাপিডিয়া থেকে অর্থ উদ্ধৃত করে জনগণকে বুঝাতে চাচ্ছেন, মূৰ্তি আর ভাস্কর্য এক ও অভিন্ন বস্তু। অতএব ভাস্কর্যটি সরাতেই হবে। অথচ আলেম হিসেবে তারা বিষয়টিকে কোরানের আলোকে উপস্থাপন করলেই স্পষ্ট হয়ে যেত, আল্লাহর দৃষ্টিতে মূৰ্তি আর ভাস্কর্য এক ও অভিন্ন জিনিষ কিনা! 
    ১. সূরা নাহলের ৩৬ নম্বর আয়াতের প্রথমাংশে আল্লাহ তা’লা বলেছেন, “আর আল্লাহর ইবাদত করবার ও তাণ্ডতকে বৰ্জন করার নির্দেশ দেয়ার জন্য আমি প্রত্যেক জাতির মাঝে রসূল পাঠিয়েছি।'... অর্থাৎ সমস্ত নবী-রসূল আল্লাহর একত্ববাদ বা তাওহীদ শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তাদের কেউ কখনও শিরক করেন নি বা শিরকের শিক্ষা দেন নি। 
    ২. সূরা সাবার ১৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তালা হজরত সুলায়মান (আ.) প্রসঙ্গে বলেছেন, “তারা তার (অর্থাৎ সুলায়মানের) ইচ্ছানুযায়ী প্রাসাদ ও ভাস্কর্য এবং হাওযসদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং সুদৃঢ়ভাবে স্থাপিত ডেগ নির্মাণ করত। আমি বলেছিলাম, হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতার সাথে তোমরা কাজ করতে থাক।'... এখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, আল্লাহর পবিত্র নবী হজরত সুলায়মান (আ.) অন্যান্য জিনিষপত্রের পাশাপাশি ভাস্কর্য নির্মাণ করাতেন। আর একাজকে নিষেধ না করে আল্লাহ্ তা'লা বরং এ বিষয়ে কৃতজ্ঞতা প্ৰকাশ করতঃ কাজ অব্যহত রাখতে বলেছেন। অতএব ভাস্কৰ্যনিৰ্মাণ শিরক বা অংশিবাদিতার নামান্তর নয়। এমনটি হলে আল্লাহর পবিত্র নবী তা কক্ষনও করতে পারতেন না! উল্লেখ্য, এ আয়াতে ভাস্কর্যের জন্য আরবীতে ‘তামাসীল” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
    ৩. সূরা ইবরাহিমের ৩৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা’লা বলেছেন, “এবং স্মরণ কর, ইবরাহিম যখন বলেছিল, “হে আমার প্রতিপালক! এ নগরীকে নিরাপদ করো এবং আমাকে ও আমার পুত্রদেরকে প্রতিমাপুজা থেকে দূরে রেখো”। হজরত ইবরাহিম(আঃ) যখন মক্কা নগরীর ভিত পুণঃস্থাপন করেন তখন তিনি এ দােয়াটি করেছিলেন। এতে তিনি মূর্তিপূজার অপবিত্রতা থেকে নিজেকে এবং নিজ বংশধরদের মুক্ত রাখার জন্য আল্লাহর কাছে মিনতি জানিয়েছিলেন। এস্থলে মূর্তির জন্য আরবীতে ‘আসনাম' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। 
    পুরিস্কার বুঝা গেল, পবিত্র কোরআনের পরিভাষায় ভাস্কর্যের জন্য ‘তামসীল আর মূর্তির জন্য ‘আসনাম দুটি পৃথক পৃথক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অতএব এ দুটি ভিন্ন জিনিষ, ভিন্ন উদ্দেশ্যে এ দুটি নির্মিত হয়। ৪. সূরা ইউসুফের শেষে আল্লাহ তা’লা নবী-রসূলদের উল্লেখ করার পর ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, "তাদের বৃত্তান্তে বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে এক মহাশিক্ষা।'. তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য হল, অযথা ফতোয়াবাজি না করে

    খোদাভীরুতার সাথে কোরআন চৰ্চা করি, নবী-রসূলদের শিক্ষানুযায়ী শান্তিপূর্ণ জীবনাদর্শ গ্রহণ করি। আশা করি, দেওবন্দী আলেম-উলামা আগামীতে আমাদেরকে বাংলা অভিধান থেকে ধর্ম না শিখিয়ে পবিত্র কোরআন থেকে ইসলাম শিক্ষা দিবেন। 






www.islamshanti.wordpress.com

Friday, May 5, 2017

বঙ্গবন্ধুর একটি বিশেষত্ব


য় মাস রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধ শেষে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ’৭১-এর ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অতর্কিতে আক্রমণের মাধ্যমে যে যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। ১৬ই ডিসেম্বর পর বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ১০ই জানুয়ারী ১৯৭১ থেকে ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫-এর ভোর পর্যন্ত তিনি দেশ পরিচালনা করেছিলেন। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সুদৃঢ় একটি ভিতের ওপর দাঁড় করানাের চেষ্টা তিনি তার সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে করে গেছেন। কিন্তু এর মাঝে তিনি কখনও কোন ধর্মব্যবসায়ী মোল্লা-হুজুরকে কাছে-ধারে ভিড়তে দেন নি। কেন দেন নি? একথার উত্তর তিনি তৎকালীন জাতীয় পরিষদের খসড়া সংবিধান রচনাকালে নিজের নীতিনির্ধারণী ভাষণে বলে দিয়েছেন। তিনি ধর্মব্যবসায়ী মোনাফেকদের হাড়ে হাড়ে চিনতেন। ধর্মনিরপেক্ষতার জাতীয় নীতি অবলম্বনকালে তিনি একথা স্পষ্টভাবে বলেছেন। 

বে হ্যা, দু’জন ধর্মভীরু মাওলানাকে তিনি কাছে আসতে দিতেন, কেননা তারা ছিলেন স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি। একজন হলেন মাওলানা ভাসানি অপরজন ছিলেন মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ। এর বাইরে স্বাধীনতাবিরোধী কোন কপট মােল্লা-হুজুরকে তিনি কাছে-ধারে ভিড়তে দেন নি। জাতির সবচেয়ে কঠিন লগ্নে যখন জাতির কাছে জনবলের সবচেয়ে বেশি অভাব ছিল তখনও যেহেতু তিনি কপটদের স্থান দেন নি। তাই এ থেকে বর্তমানেও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত চেতনা লালনকারীদের অনেক কিছু শেখার আছে।










islamshanti-wordpress.com